ভালো ছাত্র হওয়ার সহজ উপায়

আমরা জানি "শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড" । শিক্ষাই পারে একটি জাতিকে উন্নতির চরম শিখড়ে নিয়ে যেতে। আর শিক্ষার মুল কেন্দ্রবিন্দু হলো শিক্ষার্থী। একজন ভালো ছাত্রের গুনাবলী কেমন হবে তা আমরা অনেকেই জানিনা। আজকের এই পোস্টে আমরা ভালো ছাত্র হওয়ার সহজ উপায় এর বিভিন্ন বিষয়ে বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
ভালো ছাত্র হওয়ার  সহজ উপায়

ভালো ছাত্র হওয়ার সহজ উপায় 

একজন ভালো শিক্ষার্থী দেশের জন্য অতি মুল্যবান সম্পদ। যে ছাত্র হিসেবে ভালো, সকলেই তাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে। বিশেষ কিছু গুণাবলী অর্জন করার মাধ্যমে যে কেউ ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। 

ভালো ছাত্রের গুণাবলীঃ

যে ছাত্র হিসাবে ভালো, তার বিশেষ কতগুলো গুণ রয়েছে যা তাকে একজন ভালো ছাত্র হিসাবে সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হিসাবে পরিচিত করে তুলে। ভালো ছাত্রের গুণাবলী গুলো কেমন হওয়া উচিত তা লিপিবদ্ধ করা হলো-
  • নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি
  • শিক্ষকদের কথা মেনে চলা
  • সময়ের সঠিক ব্যবহার
  • নিয়মানুবর্তি হওয়া
  • সত্যবাদী হওয়া
  • ক্লাসে মনোযোগী হওয়া
  • অধ্যাবসায়ী মনোভাব থাকা
  • সহযোগিতার মনোভাব থাকা
  • কৌতূহলী হওয়া
  • অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা
  • রুটিন তৈরি করা
  • খারাপ বন্ধু পরিহার
  • লাইব্রেরী ওয়ার্ক করা

নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতিঃ

যে কোনো কাজ নিয়মিত করলে সে কাজে সফলতা আসতে বাধ্য । যখন একজন ছাত্র নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি বিষয়টির দিকে খেয়াল রেখে ক্লাসে উপস্থিত থাকে তখন সে সকল শ্রেণি কার্যক্রম নিয়মিত সম্পন্ন করতে পারে। এভাবে নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে করতে একদিন ভালো ছাত্র হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।

 সুতরাং আমরা বলতে পারি যে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি, ভালো ছাত্র হওয়ার সহজ উপায় এর মধ্যে অন্যতম একটি গুনাবলী। ভালো ছাত্র হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হওয়া অতীব জরুরী।

শিক্ষকদের কথা মেনে চলাঃ

পৃথীবিতে বাবা মায়ের পরে যাদের কথা আমাদের শুনে মেনে চলা দরকার তারা হলেন আমাদের শিক্ষক। শিক্ষকগণ যে কথা বলেন, তা মেনে চললে নিজেকে ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব। শিক্ষকগণ কোন কাজ করা উচিত , কোন কাজ করা উচিত নয়, কোন কাজ কীভাবে করতে হয় প্রভৃতি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

আর এই সব পরামর্শ মেনে চললে খুব সহজেই একজন ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে উঠা যায়। তাই ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে উঠতে শিক্ষকদের কথা মেনে চলা উচিত।

সময়ের সঠিক ব্যবহার  :

পৃথিবীতে যারা মহৎ ও সফল মানুষ তাদের জীবনী পাঠ করলে দেখা যায় তারা সকলেই সময়ের সঠিক ব্যবহার করেছেন। সময় অতি মূল্যবান জিনিস। যারা সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে জানেনা তারা কোনদিন সফলতায় পৌঁছতে পারেনা। কথায় আছে " সময় ও নদীর স্রোত কারো জন্যে অপেক্ষা করেনা" । যে সময় একবার চলে যায় তা আর কোনদিন ফিরে পাওয়া যায় না ।

 তায় ছাত্র বয়স থেকেই সময়ের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আজকের কাজ কাল করবো বলে ফেলে রাখলে সময়ের সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পাদনের মধ্য দিয়ে সময়ের সুষম ব্যবহার চর্চা করা যায়। যে ছাত্র সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে জানে সে নিশ্চিতভাবে ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে অঠে।

 তাই ভালো ছাত্র হওয়ার সহজ উপায় হিসাবে সময়ের সঠিক ব্যবহার এই বিষয়ে সকল ছাত্রদের সচেতন দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

নিয়মানুবর্তী হওয়া  :

প্রতিটি কাজ করার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম শৃংখলা রয়েছে। একজন ভালো ছত্রের অন্যতম প্রধান কাজ হলো নিয়মানুবর্তী হওয়া। প্রতিদিন বিভিন্ন কাজ সুনির্দিষ্ট নিয়মে  সম্পন্ন করার মাধ্যমে নিয়মানুবর্তিতার চর্চা করা যায় এবং নিজেকে ভালো ছাত্র হিসাবে গড়ে তোলা যায়।

হতে পারে তা ক্লাসে, ক্লাসের বাইরে, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে, খেলাধুলায়, ও অন্যান্য সহ শিক্ষাক্রমিক কার্যাবলীতে  অংশগ্রহণের মাধ্যমে খুব সহজেই একজন ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে ওঠা যায়

সত্যবাদী হওয়া

সত্যবাদিতা একটি মহৎ। গুণ আমরা ছোট থেকে জেনে আসছি, যে সত্য কথা বলে তাকে সকলে বিশ্বাস করে। সত্যবাদীকে সকলেই ভালোবাসে। যে ছাত্র হিসেবে সত্য কথা বলে সকল শিক্ষক তাকে পছন্দ করে। এমনকি শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থী তাকে পছন্দ করে। তাই সত্যবাদী হওয়া খুবই জরুরী। সত্যবাদী ছাত্রকে শিক্ষকরা তাদের বিভিন্ন কার্যাবলীতে সবার আগে স্থান দেয়।

শিক্ষকদের সুদৃষ্টি থাকার কারণে ঐ ছাত্র প্রতিনিয়ত ভালো কাজ অংশগ্রহণ করে এবং ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে ওঠে।  তাই সকলের সত্য কথা বলা উচিত এবং ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে ওঠা উচিত ।সুতরাং ভালো ছাত্র হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে সত্যবাদী হওয়া।

ক্লাসে মনোযোগী হওয়া

একজন ভালো ছাত্রের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে ক্লাসে মনোযোগী হওয়া , মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকদের কথা শোনা । শিক্ষক যে বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছে সে বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা । মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকদের কথা শোনার ফলে সমস্ত কথাগুলো তার মস্তিষ্কে কিছু সময়ের জন্য  অবস্থান করে এবং পরবর্তীতে তা স্মরণ করতে সহায়তা করে ।

সুতরাং শ্রেণীতে যে বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে সেই বিষয়গুলো মনে রাখার জন্য মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকদের কথা শোনা অত্যন্ত জরুরী। তা না হলে যে বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে সেই বিষয়গুলো কোনভাবেই মনে থাকবে না। এর ফলে সে ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। সুতরাং ক্লাসে মনোযোগী হওয়া একজন ভালো ছাত্রের একটি বিশেষ গুণ। যা তাকে সত্যিকার অর্থে ভালো  ছাত্র হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে।

অধ্যাবসায়ী মনোভাব থাকা

যে কোন মানুষ কোন কাজ করতে গেলে  প্রথমেই সফল নাও হতে পারে।  যে কোন কাজে ব্যর্থতা আসতেই পারে। ব্যর্থতা মানেই কাজের সমাপ্তি নয়। কোন কাজে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পরেও সেই কাজটা পুনরায় মনোযোগ ও ধৈর্য সহকারে করাকে অধ্যাবসায় বলে। পৃথিবীতে বিখ্যাত মনীষীদের জীবনে পাঠ করলে দেখা যায় তাদের সফলতার পিছনে অধ্যাবসায় লুকিয়ে আছে।

তাই পড়াশোনা করে  ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য  অধ্যাবসায় অত্যন্ত জরুরী। কোন বিশেষ একটি বিষয়ে পাঠ অভ্যাস করতে ব্যর্থ হওয়া বা সমস্যায় পড়া মানে সেই বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়া নয় , অধ্যবসায়ের সাথে সেই পাঠটি বা সেই অধ্যায়টি বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে । যারা এই কাজটা করে তারাই ভবিষ্যতে ভালো ছাত্র হিসেবে দেশ এবং জাতির মুখ উজ্জ্বল করে।

 সহযোগিতার মনোভাব থাকা

পৃথিবীতে আমরা কেউই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে জন্মগ্রহণ করি না। সমাজে বসবাস করতে গেলে একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করতে হয়। যা একজন মানুষকে সামাজিক জীব হিসেবে পরিচিতি দান করে। বিদ্যালয় একটি সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে অনেক ছাত্র একই সাথে একই রকমের বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করে।

বিভিন্ন কাজে একজন অপরজনকে সহযোগী বা সহযোগিতার মনোভাব থাকা একান্ত প্রয়োজন। যে শিক্ষার্থী তার সহপাঠীর প্রতি সহনশীল এবং সহযোগী মনোভাব নিয়ে চলে সকল শিক্ষার্থী তাকে পছন্দ করে । আর এই ধরনের গুণাবলী তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে । তাকে অধ্যাবসায়ী করে তোলে। যার ফলে এ ধরনের গুণাবলী একে একে অর্জন করার মাধ্যমে  সে ভালো ছাত্র হিসেবে নিজেকে পরিচিতি দান করতে সক্ষম হয়। তাই একজন শিক্ষার্থীর  সহযোগিতার মনোভাব থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।

লেখকের কথা

বর্তমান পোস্টটিতে একজন ভালো ছাত্র হয়ে গড়ে ওঠার বিভিন্ন কৌশল তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। যদি এই বিষয়গুলো কোন ছাত্রকে সত্যিকার অর্থে ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে তুলতে সামান্যতম সহযোগিতা প্রদান করে তাহলে আমাদের এই লেখাটি খানিকটা হলেও স্বার্থক বলে মনে করবো।  আমাদের এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে পরিচিত কাউকে শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টের কিভাবে আরো উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব  বা আরো কোন কোন বিষয় তুলে ধরলে ভালো হয় , সে বিষয়ে কমেন্ট করে  আমাদেরকে জানালে তা সাদরে গ্রহনযোগ্য। ধনবাদ সবাইকে আমাদের সাথে থাকার জন্য। 































































































এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url